356
Points
Questions
55
Answers
101
-
হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর দাসী ছিল ২ জন।
- 776 views
- 1 answers
- 0 votes
-
পবিত্র কুরআনুল কারীমে সর্ব মোট ১১৪টি সূরা আছে।
- 708 views
- 1 answers
- 0 votes
-
পবিত্র কুরআনের প্রথম সূরার নাম – সূরা ফাতিহা – سورة فتيحة
- 722 views
- 1 answers
- 0 votes
-
হযরত মুহাম্মদ সাঃ এবং খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহু এর বিবাহের দেনমোহর ছিল ৫০০ দিরহাম।
- 578 views
- 1 answers
- 0 votes
-
মদিনার সর্বপ্রথম কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র আহলে সুফ্ফা। মসজিদে নববি-র পূর্বপাশে স্থাপিত।
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ সাঃ এর হিজরতের পর মদিনায় মসজিদে নববি-র পূর্বপাশে স্থাপিত হয় মাদ্রাসা আহলে সুফ্ফা।
শিক্ষক ছিলেন উবাদা-ইবন সামিত আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন আবু হুরাইরা (রা) মুয়াজ-ইবন জবল গিফারি (রা) প্রমুখ।
সেকালের মাদ্রাসার পাঠ্যসূচিতে ছিল, কোরআন, হাদিস, ফারায়েজ, প্রাথমিক চিকিৎসা, বংশ শাস্ত্র, তাজবিদ ইত্যাদি।
এছাড়া অশ্ব চালনা, যুদ্ধবিদ্যা, হস্তলিপি বিদ্যা, শরীর চর্চা ইত্যাদিও পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল। নবুয়তের প্রথম দিন থেকে উমাইয়া বংশের শাসনামলের প্রথম ভাগ পর্যন্ত প্রায় একশ বছর সময়কালকে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রথম পর্যায় ধরা হয়।
- 1033 views
- 1 answers
- 0 votes
-
মাদ্রাসা শিক্ষায় প্রথম প্রতিষ্ঠান ছিল সাফা পর্বতের পাদদেশে যায়েদ-বিন-আরকামের বাড়িতে, যেখানে স্বয়ং রসুল (স:) ছিলেন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী ছিলেন তাঁর কয়েকজন অনুসারী।
মক্কার সর্বপ্রথম কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র এটি।
বিস্তারিত দেখুনঃ মাদ্রাসা
- 1006 views
- 1 answers
- 0 votes
-
১। যে নদীর কোন শাখা নদী নাই কিন্তু উপনদী থাকতে পারে তাদের নদ বলে। আর যে নদীর শাখা নদী বা শাখা নদী ও উপনদী আছে তাদের নদী বলে। (NB: এই সংজ্ঞা টির কোন ভিত্তি নেই )
তার আগে আপনাকে শাখা নদী ও উপনদীর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে।
শাখা নদী = যদি কোন নদী থেকে অন্য একটা নদীর উৎপত্তি হয় তাহলে সেই অন্য নদীকে ঐ নদীর শাখা নদী বলে।
উপনদীর = আবার অন্য কোন নদী যদি আর একটা নদীর সাথে মিলিত হয় তাহলে সেই অন্য নদীকে সেই আর একটা নদীর উপনদী বলে।
২। ভূগোলের দৃষ্টিতে নদ ও নদীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
৩. নদ এবং নদীর পার্থক্য বোঝাতে এ পর্যন্ত একটি পদ্ধতি বা নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে।নিয়মটি হলো :স্ত্রী এবং পুরুষ নাম জ্ঞাপক শব্দ, সাধারণত স্ত্রী নামে যে প্রবাহগুলো রয়েছে সেগুলোকে আমরা নদী নামে অভিহিতকরে আসছি। যেমন- গঙ্গা, সরস্বতী,যমুনা, পদ্মা, গৌরী, ভাগীরথী, চিত্রা, নর্মদা,কাবেরী, কৃষ্ণা ইত্যাদি।
আবার পুরুষনামে যেগুলোর প্রবাহসেসবকে বলা হচ্ছে নদ। যেমন- ব্রহ্মপুত্র, নারদ,ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, মুসা খান,মির্জা মাহমুদ ইত্যাদি।
আসলে এই সূত্র নিয়েও কিছুটা বিতর্ক আছে।অধিক গ্রহণযোগ্য আরেকটি সূত্র হচ্ছে, নামেরশেষে যদি আকার, এ কার, ও কার, ঔ কার ইত্যাদি থাকে তবে নিশ্চিতভাবে সেই প্রবাহগুলো নদী নামে অভিহিত হবে। নামেরশেষে এগুলো না থাকলে এবং শুধু হ্রসুকার থাকলে অবশ্যই নদ হবে। যেমন- আড়িয়ালখাঁ-এটি পুরুষ নাম জ্ঞাপকহলেও যেহেতু শেষে আকার রয়েছে সে জন্য এটি নদ না হয়ে নদী।
কিন্তু মুসা খান ন-এরপরে আকার একার কিছুনেই, যে কারণে এটি নদ। সিন্ধু যেহেতু হ্রসুকার রয়েছে শেষে, যে কারণে এটি নদ। একইভাবে বালু-এটিও নদ। নীলস্ত্রী নাম জ্ঞাপক একটি প্রবাহ। যেহেতু এরশেষে আকার, এ কার কিছু নেই, সেইসূত্রে এটি নদ। এভাবে ঘাঘটস্ত্রী নামক জ্ঞাপক হলেও ট-এর পরে আ-কার,এ-কার নেই, যে কারণে এটিও নদ।
This answer accepted by জেসমিন সুলতানা সুইটি. on October 21, 2018 Earned 5 points.
- 2483 views
- 3 answers
- 0 votes
-
social bookmarking ও link submission ওয়েব সাইট থেকে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ visitors পায় না কারণ এ সকল ওয়েব সাইটে আমরা এত সংক্ষেপে আর্টিকেল লিখি যে, কোন সার্চ ইঞ্জিন এই শর্ট আর্টিকেল প্রধান্ন দেয় না।
আরো বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিচের ভিডিওটি দেখুন
This answer accepted by অচেনা পথিক. on January 16, 2018 Earned 5 points.
- 31287 views
- 1 answers
- 0 votes
-
জাল হাদিসঃ
আরবীতে একে “মওজু” বলা হয়। এই মওজু বা জাল হাদিস হলো মিথ্যা বা বানোয়াট হাদিস যা অদৌ মূলত কোন হাদিসই নয়। ঐ সকল হাদিসকে জাল হাদিস বলা হয় যা রাসূল (সাঃ) এর নামে বানানো হয়েছে যা অদৌ কখনই তিনি বলেন নি। এক কথায় রাসূল (সাঃ) এর নাম ভাঙ্গিয়ে প্রচলিত ও কথিত হাদিসকে জাল বা মওজু বা বানোয়াট বা মিথ্যা হাদিস বলা হয়।
জাল হাদিস কোন হাদিসই নয়। জাল হাদিস বর্ণনা বা প্রচার করার মানে বা অর্থ হলো রাসূল (সাঃ) এর উপর মিথ্যারপ করা। তাকে মিথ্যার অপবাদে দূস্টো করা এবং তার কথাকে প্রত্যাখ্যান করে সীমালঙ্ঘন করা। যা জাহান্নামে যাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। এ প্রসঙ্গে
#রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
( مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّداً فاَلْيَتَبَوَّء ْ مَقْعَدَهُ مِنْ الناَّرِ )
“যে ব্যক্তি আমার উপরে মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।”
(সহীহ বুখারী, প্রথম খন্ড, কিতাবুল ইলম, হাদিস নং ১০৭;
সহীহ মুসলিম, প্রথম খন্ড, কিতাবুল ঈমান)#তিনি আরও বলেনঃ
“তোমরা আমার উপর মিথ্যারোক কর না, নিশ্চই আমার উপর মিথ্যারোপকারী জাহান্নামে প্রবেশ করবে”
(বুখারী, প্রথম খন্ড, কিতাবুল ইলম, হাদিস নং ১০৬;
মুসলিম, প্রথম খন্ড, কিতাবুল ঈমাণ;
ইবনু মাজাহ, হাদিস নং ২৯)#তিনি আরও বলেনঃ
( منَ حَدَّثَ عَنِّيْ بِحَدِيْثٍ يَرَى أنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أحَدُ الْكاَذِبِيْنَ )
“যে ব্যক্তি আমার নামে এমন হাদীছ বর্ণনা করে যে, তার ধারণা হয়, ওটা মিথ্যাও হতে পারে; তবে সে অন্যতম সেরা মিথ্যুক।
(সহীহ মুসলিম, প্রথম খন্ড,
কিতাবুল ঈমান)
সুতরাং হাদিস বর্ননায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।আমাদের সমাজে অসংখ্য জাল বা বানোয়াট হাদিস প্রচলিত রয়েছে। অনেকের নিজের জ্ঞানের অজ্ঞতার কারনে অথবা দলীয় গোঁড়ামীর কারনে এসব বানানো হাদিস বিশ্বাস ও আমলের পাশাপাশি প্রচার ও প্রসার করে থাকেন। মনে রাখতে হবে আমলের জন্য যেমন সহীহ্ হাদিস জানা প্রয়োজন ঠিক তেমনি আমলকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য জাল ও যঈফ হাদিস জানা ও অন্যকে জানানো প্রয়োজন। তাই মুসলিম ভাইদেরকে সতর্ক করার লক্ষে এখানে সিরিজ ও ধারাবাহীক ক্রমিকানুসারে শুধুমাত্র জাল হাদিস গুলোকে (এই ধাপে) বর্ণনা করা হবে।
জানা আবশ্যক যে, জাল হাদিসর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রচারক হচ্ছে পীর ও মাজার তথা কবরপূজারী এবং শিরক ও বিদয়াতপন্থীরা। এদের কেউ নিজেদের ধর্মকে টিকাতে, কেউবা নিজেদের পথভ্রষ্ট বুজুর্গের বিনা পূজীর পীর ব্যবসা জমজমাট করতে আবার কেউবা বিদয়াত ব্যবসা করে নিজেদের সংসার চালাতে এবং বিদয়াতের জিলাপীর আশায় এসব জাল হাদিস প্রচার ও প্রসার করে থাকে।
সবশেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথাঃ
হাদিস বর্ননা তথা অন্যের নিকট প্রচার বা জনানোর প্রধান শর্ত হিসেবে একটি বিষয়ের প্রতি নিশ্চিত থাকা উচিত; আর সেটি হলো যে হাদিসটি আপনি যার কাছ থেকে শুনেছেন বা পেয়েছেন তার নির্ভরযোগ্যতা বা গ্রহণযোগ্যতা বা বিশ্বস্ততা। অর্থাত্ সে পাপচারী কিনা, সূফীবাদী কিনা, বিদয়াতপন্থী কিনা এসব নিশ্চিত থাকা। এতে সে পোস্টারভর্তি টাইটেলধারীই আলেমই হোক কিংবা সাধারণ ফাসেক মানুষই হোক। জাল হাদিসর পৃষ্ঠপোষক সূফীবাদীরা তো দূরের কথা বিদয়াতপন্থী হলে কিংবা কোন আলেম সহীহ হাদিসকে দলের দোহাই দিয়ে না মানলে; তাদের মুখনিঃসৃত সকল হাদিসকে বর্জন করা উচিত। কেননা তারা সত্যের সঙ্গে মিথ্যা মিশিয়ে ফেলে।হাদিস বলার ক্ষেত্রে নিচের দুটি হাদিসর প্রতি লক্ষ ও নিশ্চয়তা রেখে বর্ননা করা উচিত।
- 3994 views
- 1 answers
- 0 votes
-
صحيح hadiths শব্দটি আরবি। বহুবচনে صحاح। এর আভিধানিক অর্থ সুস্থ। সাধারণত মানুষের শারীরিক সুস্থতার জন্য ‘সহিহ’ ব্যবহৃত হয়, যেমন হাদিসে এসেছে: ” وَأَنْتَ صَحِيحٌ ” ‘তুমি সুস্থাবস্থায়’ এ থেকেই সনদ ও মতন দোষমুক্ত হলে হাদিসকে সহিহ বলা হয়।
‘সহিহ’-র পারিভাষিক সংজ্ঞা প্রসঙ্গে হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী বলেন :
هو ما نقله العدل تام الضبط متصل السند غيرمعلل ولا شاذ .
“যে হাদিস মুত্তাসিল সনদ তথা অবিচ্ছিন্ন সনদ পরম্পরায় বর্ণিত হয়, রাবী বা বর্ণনাকারী আদিল ও পূর্ণ আয়ত্বশক্তির অধিকারী হয়, এবং সনদটি শায কিংবা মুআল্লাল নয়; এমন হাদিস কে সহিহ বলে।
মোটকথা, হাদিস সহিহ হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে :
১. সনদ মুত্তাসিল হওয়া।
২. রাবির আদিল হওয়া।
৩. রাবির দ্বাবিত হওয়া।
৪. শায না হওয়া।
৫. মু‘আল্লাল না হওয়া।প্রথম শর্ত: اتصال السند বা সনদ মুত্তাসিল হওয়া:
সনদ মুত্তাসিল হওয়ার অর্থ, হাদিসের সনদে বিদ্যমান প্রত্যেক রাবি (বর্ণনাকারী) তার শায়খ (শিক্ষক) থেকে সরাসরি হাদিস শ্রবণ করেছেন প্রমাণিত হওয়া। যেমন গ্রন্থকার মুহাদ্দিস বললেন: আমার নিকট বর্ণনা করেছে অমুক (প্রথম উস্তাদ), তিনি বললেন: আমার নিকট বর্ণনা করেছে অমুক (দ্বিতীয় উস্তাদ), তিনি বললেন: আমার নিকট বর্ণনা করেছে অমুক (তৃতীয় উস্তাদ), তিনি বললেন: আমার নিকট বর্ণনা করেছে অমুক (চতুর্থ উস্তাদ)। এভাবে প্রত্যেক রাবি স্বীয় শায়খ থেকে শ্রবণ করেছে নিশ্চিত করলে সনদ মুত্তাসিল।
শায়খের অনুমতি গ্রহণ করা, শায়খকে হাদিস শুনিয়ে সম্মতি নেওয়াকে সরাসরি শ্রবণ করা বলা হয়।দ্বিতীয় শর্ত: عدالة الراوى বা রাবির ‘আদল:
সহিহ হাদিসের দ্বিতীয় শর্ত রাবির ‘আদল’ হওয়া। عدل ‘আদ্ল’ শব্দের অর্থ সোজা ও বক্রতাহীন রাস্তা, যেমন বলা হয় طريق عدل ‘সোজা রাস্তা’। পাপ পরিহারকারী ও সুস্থরুচি সম্পন্ন ব্যক্তি ন্যায় ও সোজা রাস্তার অনুসরণ করে, তাই তাকে ‘আদ্ল’ বা ‘আদিল’ বলা হয়। عادل কর্তাবাচক বিশেষ্য, অর্থ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি। হাদিসের পরিভাষায় দীনদারী ও সুস্থরুচিকে عدالة বলা হয়।
‘আদিল’ এর পারিভাষিক সংজ্ঞা: মুসলিম, বিবেকী, সাবালক, দীন বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত ও সুস্থ রুচির অধিকারী ব্যক্তিকে উসুলে হাদিসের পরিভাষায় ‘আদিল’ বলা হয়। নিম্নে প্রত্যেকটি শর্ত প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হলো:
মুসলিম : রাবির ‘আদিল হওয়ার জন্য মুসলিম হওয়া জরুরি। অতএব কাফের ‘আদিল’ নয়, তার হাদিস সহিহ নয়। কাফের কুফরি অবস্থায় হাদিস শ্রবণ করে যদি মুসলিম হয়ে বর্ণনা করে, তাহলে তার হাদিস গ্রহণযোগ্য। কারণ সে সংবাদ দেওয়ার সময় আদিল, যদিও গ্রহণ করার সময় আদিল ছিল না। যেমন জুবাইর ইব্ন মুতয়িম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
«سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّورِ»
“আমি নবি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবের সালাতে সূরা তূর পড়তে শুনেছি”। তিনি শুনেছেন কাফের অবস্থায়, আর বর্ণনা করেছেন মুসলিম অবস্থায়। (বুখারি ও মুসলিম)
সাবালিগ : রাবির আদিল হওয়ার জন্য সাবালিগ হওয়া জরুরি। কেউ শৈশবে হাদিস শ্রবণ করে যদি সাবালিগ হয়ে বর্ণনা করে, তাহলে তার হাদিস গ্রহণযোগ্য, সাবালিগ হওয়ার পূর্বে তার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। কতক সাহাবির ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য নয়, যেমন ইব্ন আব্বাস, ইব্ন যুবায়ের ও নুমান ইব্ন বাশির প্রমুখ, তাদের হাদিস শৈশাবস্থায় গ্রহণ করা হয়েছে।
বিবেকবান : রাবির আদিল হওয়ার জন্য বিবেক সম্পন্ন হওয়া জরুরি। বিবেকহীন ও পাগল ব্যক্তির বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। পাগল দু’প্রকার: স্থায়ী পাগল ও অস্থায়ী পাগল। স্থায়ী পাগলের হাদিস কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়। অস্থায়ী পাগলের মধ্যে যদি সুস্থাবস্থায় সহিহর অন্যান্য শর্ত বিদ্যমান থাকে, তাহলে তার হাদিস গ্রহণযোগ্য, তবে শ্রবণ করা ও বর্ণনা করা উভয় অবস্থায় সুস্থ থাকা জরুরি।
দীনদারী : রাবির ‘আদিল হওয়ার জন্য দীনদার হওয়া জরুরি, তাই পাপের উপর অটল ব্যক্তি আদিল নয়। পাপ হলেই ‘আদল বিনষ্ট হবে না, কারণ মুসলিম নিষ্পাপ নয়, তবে বারবার পাপ করা কিংবা কবিরা গুনায় লিপ্ত থাকা ‘আদল পরিপন্থী। দীনের অপব্যাখ্যাকারী, তাতে সন্দেহ পোষণকারী ও বিদ‘আতির হাদিস গ্রহণ করা সম্পর্কে আহলে ইলমগণ বিভিন্ন শর্তারোপ করেছেন।
সুস্থ রুচিবোধ : রাবির ‘আদল হওয়ার জন্য সুস্থ রুচিবোধ সম্পন্ন হওয়া জরুরি। সুস্থ রুচিবোধের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। প্রত্যেক সমাজের নির্দিষ্ট প্রথা, সে সমাজের জন্য মাপকাঠি, যা স্থান-কাল-পাত্র ভেদে নানা প্রকার হয়। সাধারণত সৌন্দর্য বিকাশ ও আভিজাত্য প্রকাশকারী কর্মসমূহ সম্পাদন করা এবং তুচ্ছ ও হেয় প্রতিপন্নকারী কর্মসমূহ পরিত্যাগ করাকে সুস্থ রুচিবোধের পরিচায়ক বলা হয়।
হাফেয ইব্ন হাজার রাহিমাহুল্লাহ ‘আদল’ এর সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আদল’ ব্যক্তির মধ্যে এমন যোগ্যতা, যা তাকে তাকওয়া ও রুচিবোধ আঁকড়ে থাকতে বাধ্য করে”। অতএব ফাসেক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ‘আদিল’ নয়, যদিও সে সত্যবাদী। জামাত ত্যাগকারী ‘আদিল’ নয়, যদিও সে সত্যবাদী, সুতরাং তাদের বর্ণনাকৃত হাদিস সহিহ নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن جَآءَكُمۡ فَاسِقُۢ بِنَبَإ فَتَبَيَّنُوٓاْ أَن تُصِيبُواْ قَوۡمَۢا بِجَهالَة فَتُصۡبِحُواْ عَلَىٰ مَا فَعَلۡتُمۡ نَٰدِمِينَ ٦ [الحجرات: ٦
“হে ঈমানদারগণ, যদি কোনো ফাসেক তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে”। ফাসেক ব্যক্তির সংবাদ যাচাই ব্যতীত গ্রহণ করা যাবে না, পক্ষান্তরে আদিল ব্যক্তির সংবাদ গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ বলেন,
وَأَشۡهِدُواْ ذَوَيۡ عَدۡلٖ مِّنكُمۡ وَأَقِيمُواْ ٱلشَّهَٰدَةَ لِلَّهِۚ ٢ [الطلاق : ٢
“আর তোমাদের মধ্য থেকে ন্যায়পরায়ণ দু’জন সাক্ষী বানাবে। আর আল্লাহর জন্য সঠিক সাক্ষ্য দেবে।”। এ আয়াতে আল্লাহ ‘আদিল’ ব্যক্তিদের সাক্ষীরূপে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সারাংশ : ‘আদিল’ ব্যক্তির মধ্যে দু’টি গুণ থাকা জরুরি: দীনদারী ও সঠিক রুচিবোধ। এ দু’টি গুণকে ‘আদালত’ বলা হয়। কখনো ‘আদিল’ ব্যক্তির জন্য ক্রিয়াবিশেষ্য ‘আদ্ল’ শব্দ ব্যবহার করা হয়, যেমন লেখক বলেছেন: يرويه عدل এখানে ‘আদ্ল’ অর্থ ‘আদিল’। অত্র গ্রন্থে আমরা আদিল, আদালত ও আদ্ল শব্দগুলো অধিক ব্যবহার করব, তাই পাঠকবর্গ ভালো করে স্মরণ রাখুন।
তৃতীয় শর্ত: ضبط الراوىরাবির জাবত বা সংরক্ষণ:
সহিহ হাদিসের দ্বিতীয় শর্ত রাবির ‘দাবত’। ضبط ক্রিয়াবিশেষ্য, আভিধানিক অর্থ নিয়ন্ত্রণ। এ থেকে যিনি শায়খ থেকে হাদিস শ্রবণ করে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন, তাকে ضابط বলা হয়। ‘দ্বাবিত’ কর্তাবাচক বিশেষ্য, অর্থ সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণকারী।
ضبط এর পারিভাষিক অর্থ: শায়খ থেকে শ্রবণ করা হাদিস হ্রাস, বৃদ্ধি ও বিকৃতি ব্যতীত অপরের নিকট পৌঁছে দেওয়াই ضبط।
ضبط দু’প্রকার: স্মৃতি শক্তির জাবত ও খাতায় লিখে জাবত। সাহাবি ও প্রথম যুগের তাবেয়িগণ স্মৃতি শক্তির উপর নির্ভর করতেন, পরবর্তীতে লেখার ব্যাপক প্রচলন হয়। তখন থেকে স্মৃতি শক্তি অপেক্ষা লেখার উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পায়, তবে লিখিত পাণ্ডুলিপি নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করা জরুরি।
চতুর্থ শর্ত : عدم الشذوذ বা ‘শায’- না হওয়া :
‘মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য রাবি যদি তাদের চেয়ে উত্তম বা অধিক নির্ভরযোগ্য রাবিদের বিপরীত বর্ণনা করে, তাহলে তাদের বর্ণনাকে শায বলা হয়’। সুতরাং কোন হাদিস সহী হতে হলে এমন না হওয়া। মকবুল অর্থ গ্রহণযোগ্য রাবি, যার একা বর্ণিত হাদিস ন্যূনতম পক্ষে ‘হাসানে’-র মর্যাদা রাখে। মকবুলের চেয়ে উত্তম রাবিকে সেকাহ বলা হয়, যার একা বর্ণিত হাদিস ‘সহিহ’-র মর্যাদা রাখে।
পঞ্চম শর্ত : عدم العلة কোন ধরনের ইল্লত না থাকা :
ইল্লত দ্বারা উদ্দেশ্য সুপ্ত ও গোপন ইল্লত বা ত্রুটি, বিজ্ঞ মুহাদ্দিস ব্যতীত যা কেউ বলতে পারে না। সনদ ও মতন উভয় স্থানে দোষণীয় ইল্লত হতে পারে।
সহিহ হাদিসের উদাহরণ :
حدثنا الحميدي (عبد الله بن الزبير) قال حدثنا سفيان قال حدثنا يحيى بن سعيد الأنصاري قال أخبرني محمد بن إبراهيم التيمي أنه سمع علقمة بن وقاص الليثي يقول سمعت عمر بن الخطاب رضي الله عنه على المنبر قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول * إنما الأعمال بالنيات وإنما لكل امرئ ما نوى فمن كانت هجرته إلى دنيا يصيبها أو إلى امرأة ينكحها فهجرته إلى ما هاجر إليه –
বর্ণিত হাদিসটির সনদে ইমাম বুখারি থেকে রাসুল সা. পর্যন্ত ৬ জন রাবী রয়েছে। যথা:
১. হুমাইদি (আবদুল্লাহ বিন জুবায়ের)
২. সুফিয়ান
৩. ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আল আনসারি
৪. মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহিম আত তাইমী
৫. আলকামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল লাইসি
৬. সাহাবি উমর ইবনে খাত্তাব রা.উপরোক্ত প্রত্যেক রাবি নিজ শায়খ থেকে হাদিসটি শুনেছেন যা হাদিসটির সনদে স্পষ্ট উল্লেখ রছেছে। তাই সনদটি মুত্তাসিল। প্রত্যেক রাবী আদিল ও পূর্ণরুপে জাবিত ছিলেন। তাছাড়া বর্ণিত হাদিসটি শায বা মুয়াল্লাল নয়। এ হাদিসটি ইমাম বুখারি রহ. তার সহীহ বুখারিতে সর্বপ্রথম পেশ করেছেন। এতে সহিহ হাদিসের পাঁচটি শর্ত পূর্ণরুপে বিদ্যমান রয়েছে। তাই নি:সন্দেহে এটি একটি সহিহ হাদিস।
মুফতি মনিরুল ইসলাম
মুহাদ্দিস, জামিয়া ফারুকিয়া রওজাতুল উলুম, মুন্সীগঞ্জ।- 1743 views
- 1 answers
- 0 votes