সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা বাংলা হল কিভাবে?
সিয়েরা লিওনের মাতৃ ভাষা ইংরেজি ছিল এটা আমারা সবাই জানি। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ভাষা ছেড়ে কেন তারা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা বানাল? এর কারন কি?
সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা বাংলা হল কিভাবে?
সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা বাংলা হল কিভাবে?
খুব ভাল ১টা প্রশ্ন। এর উত্তর সকল বাঙ্গালির জানা দরকার।
বাংলাদেশ থেকে বহু দূরের এক দেশে বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা হলো। ২০০২ সালে পশ্চিম আফ্রিকার একটি দেশ সিয়েরা লিওনে অফিসিয়াল ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার নাম ঘোষণা করা হয়। ভৌগলিক বা সাংস্কৃতি উভয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন সিয়েরা লিওন। কিন্তু এ দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই গভীর ও আন্তরিক যে, এ দেশের ভাষাকে নিজেদের করে নিয়েছে আফ্রিকার দেশটি।
এর কারন কি?
হ্যাঁ এর কারন হল বাংলাদেশের সেনাবাহির কাজের পুরষ্কার।
১৯৯১-২০০২ সাল পর্যন্ত দেশটি বিধ্বস্ত হয়েছে গৃহযুদ্ধে অভিশাপে। সেই সময়টাতে সিয়েরা লিওনে শান্তি ফেরাতে বিপুল পরিমাণ শান্তি বাহিনী নিয়োগ করে জাতিসংঘ। তাদের বড় একটি অংশজুড়ে ছিল বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ দেশের সেনারা সিয়েরা লিওনের বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। দেশটিতে শান্তি ফেরাতে রেখেছেন ব্যাপক ভূমিকা। বিদ্রোহীদের দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের কার্যক্রম ছিল অনবদ্য।
বাংলাদেশিরা যা করেছেন, তার জন্য সিয়েরা লিওনের সরকার কৃতজ্ঞ। ২০০২ এর আগে পরে শান্তি ফিরে আসে দেশটিতে। প্রেসিডেন্ট আহমাদ তেজান কাব্বাহ কৃতজ্ঞতা জানাতে একটুও দেরি করলেন না। তিনি বাংলাদেশি সেনা সদস্যদের ভূমিকাকে চিরস্মারণীয় রাখতে বাংলা ভাষাকে দেশটির সরকারি ভাষার মর্যাদা দিলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন করে আমাদের প্রাণ প্রিয় ভাষাকে রক্ষা করে গেছে আমাদের ভায়েরা। আর এই ভাষাকে আরও প্রসার করে দিল আমাদের সেনাবাহিনী তাদের যোগ্যতা দিয়ে।
তাই আমরা যখন ফেব্রুয়ারিতে নিজ দেশে বাংলা ভাষাকে মর্যাদা জানাই, তখন সিয়েরা লিওনেও আমাদের মায়ের ভাষা সমমর্যাদা লাভ করে। গোটা বিশ্বজুড়ে যখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পালিত হয়, তখন সবাই মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। গোটা বিশ্বের সব দেশ ও মানুষের সঙ্গে তখন আমাদের এক অটুট বন্ধন স্থাপিত হয়।
আরও বিস্তারিত দেখুনঃ