জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে নতুন করতে গেলে কি করবেন?
জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে নতুন করতে গেলে কি করবেন?
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলেঃ
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় ভোটার নম্বর বা আইডি নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এরপর জিডির মূল কপিসহ প্রকল্প কার্যালয় অথবা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে নতুন পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে নতুন পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করতে আপনার যা যা লাগবেঃ
১। জাতীয়পরিচয়পত্রের ফটোকপি / জাতীয়পরিচয়পত্রের নাম্বার।
২। জিডির মূল কপিসহ।
প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে ডুপ্লিকেট জাতীয়পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। নতুন জাতীয়পরিচয়পত্র পেতে আপনাকে ২মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
যোগাযোগঃ
ভোটার তালিকাসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে যোগাযোগ করতে হবে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্পের আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলার কার্যালয়ে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সংক্রান্ত প্রশ্ন & উত্তরঃ
১। প্রশ্নঃ কার্ডের তথ্য কিভাবে সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশোধনের পক্ষে পর্যাপ্ত উপযুক্ত দলিলাদি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
২। প্রশ্নঃ কার্ডে কোন সংশোধন করা হলে তার কি কোন রেকর্ড রাখা হবে?
উত্তরঃ সকল সংশোধনের রেকর্ড সেন্ট্রাল ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে।
৩। প্রশ্নঃ ভুলক্রমে পিতা/স্বামী/মাতাকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হলে সংশোধনের জন্য কি কি সনদ দাখিল করতে হবে?
উত্তরঃ জীবিত পিতা/স্বামী/মাতাকে ভুলক্রমে মৃত হিসেবে উল্লেখ করার কারণে পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিচয়পত্র দাখিল করতে হবে।
৪। প্রশ্নঃ আমি অবিবাহিত। আমার কার্ডে পিতা না লিখে স্বামী লেখা হয়েছে। কিভাবে তা সংশোধন করা যাবে?
উত্তরঃ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে আপনি বিবাহিত নন মর্মে প্রমাণাদিসহ আবেদন করতে হবে।
৫। প্রশ্নঃ বিয়ের পর স্বামীর নাম সংযোজনের প্রক্রিয়া কি?
উত্তরঃ নিকাহনামা ও স্বামীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি সংযুক্ত করে NID Registration Wing/ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে।
৬। প্রশ্নঃ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন ID Card থেকে স্বামীর নাম বিভাবে বাদ দিতে হবে?
উত্তরঃ বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত দলিল (তালাকনামা) সংযুক্ত করে NID Registration Wing/সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে।
৭। প্রশ্নঃ বিবাহ বিচ্ছেদের পর নতুন বিবাহ করেছি এখন আগের স্বামীর নামের স্থলে বর্তমান স্বামীর নাম কিভাবে সংযুক্ত করতে পারি?
উত্তরঃ প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদের তালাকনামা ও পরবর্তী বিয়ে কাবিননামাসহ সংশোধন ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হবে।
৮। প্রশ্নঃ আমি আমার পেশা পরিবর্তন করতে চাই কিন্তু কিভাবে করতে পারি?
উত্তরঃ এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উইং/উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিসে প্রামাণিক কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। উলেখ্য, আইডি কার্ডে এ তথ্য মুদ্রণ করা হয় না।
৯। প্রশ্নঃ আমার ID Card এর ছবি অস্পষ্ট, ছবি পরিবর্তন করতে হলে কি করা দরকার?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে নিজে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হবে।
১০। প্রশ্নঃ নিজ/পিতা/স্বামী/মাতার নামের বানান সংশোধন করতে আবেদনের সাথে কি কি দলিল জমা দিতে হবে?
উত্তরঃ এসএসসি/সমমান সনদ, জন্ম সনদ, পাসপোর্ট, নাগরিকত্ব সদন, চাকুরীর প্রমাণপত্র, নিকাহ্নামা, পিতা/স্বামী/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হয়।
১১। প্রশ্নঃ নিজের ডাক নাম বা অন্য নামে নিবন্ধিত হলে সংশোধনের জন্য আবেদনের সাথে কি কি দলিল জমা দিতে হবে?
উত্তরঃ এসএসসি/সমমান সনদ, বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্ত্রী/ স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি, ম্যাজিট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট ও জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি,ওয়ারিশ সনদ,ইউনিয়ন/পৌর বা সিটি কর্পোরেশন হতে আপনার নাম সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র।
১২। প্রশ্নঃ পিতা/মাতাকে ‘মৃত’ উল্লেখ করতে চাইলে কি কি সনদ দাখিল করতে হয়?
উত্তরঃ পিতা/মাতা/স্বামী মৃত উল্লেখ করতে চাইলে মৃত সনদ দাখিল করতে হবে।
১৩। প্রশ্নঃ ঠিকানা কিভাবে পরিবর্তন/ সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ শুধুমাত্র আবাসস্থল পরিবর্তনের কারনেই ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য বর্তমানে যে এলাকায় বসবাস করছেন সেই এলাকার উপজেলা/ থানা নির্বাচন অফিসে ফর্ম ১৩ এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। তবে একই ভোটার এলাকার মধ্যে পরিবর্তন বা ঠিকানার তথ্য বা বানানগত কোন ভুল থাকলে সাধারণ সংশোধনের আবেদন ফরমে আবেদন করে সংশোধন করা যাবে।
১৪। প্রশ্নঃ আমি বৃদ্ধ ও অত্যন্ত দরিদ্র ফলে বয়স্ক ভাতা বা অন্য কোন ভাতা খুব প্রয়োজন। কিন্তু নির্দিষ্ট বয়স না হওয়ার ফলে কোন সরকারী সুবিধা পাচ্ছি না। লোকে বলে ID Card –এ বয়সটা বাড়ালে ঐ সকল ভাতা পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ ID Card এ প্রদত্ত বয়স প্রামাণিক দলিল ব্যতিত পরিবর্তন সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, প্রামানিক দলিল তদন্ত ও পরীক্ষা করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
১৫। প্রশ্নঃ একই পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের কার্ডে পিতা/মাতার নাম বিভিন্নভাবে লেখা হয়েছে কিভাবে তা সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ সকলের কার্ডের কপি ও সম্পর্কের বিবরণ দিয়ে NID Registration Wing/ উপজেলা/ জেলা নির্বাচন অফিস বরাবর পর্যাপ্ত প্রামাণিক দলিলসহ আবেদন করতে হবে।
১৬। প্রশ্নঃ আমি পাশ না করেও অজ্ঞতাবশতঃ শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা তদুর্দ্ধ লিখেছিলাম এখন আমার বয়স বা অন্যান্য তথ্যাদি সংশোধনের উপায় কি?
উত্তরঃ আপনি ম্যাজিট্রেট আদালতে এস.এস.সি পাশ করেননি, ভুলক্রমে লিখেছিলেন মর্মে হলফনামা করে এর কপিসহ সংশোধনের আবেদন করলে তা সংশোধন করা যাবে।
১৭। প্রশ্নঃ ID Card এ অন্য ব্যক্তির তথ্য চলে এসেছে। এ ভুল কিভাবে সংশোধন করা যাবে?
উত্তরঃ ভুল তথ্যের সংশোধনের পক্ষে পর্যাপ্ত দলিল উপস্থাপন করে NID Registration Wing/সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে।এক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক যাচাই করার পর সঠিক পাওয়া গেলে সংশোধনের প্রক্রিয়া করা হবে।
১৮। প্রশ্নঃ রক্তের গ্রুপ অন্তর্ভূক্ত বা সংশোধনের জন্য কি করতে হয়?
উত্তরঃ রক্তের গ্রুপ অন্তর্ভুক্ত বা সংশোধন করতে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়কৃত ডায়াগনোসটিক রিপোর্ট দাখিল করতে হয়।
১৯। প্রশ্নঃ বয়স/ জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া কি?
উত্তরঃ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদের সত্যায়িত ফটোকপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। এসএসসি বা সমমানের সনদ প্রাপ্ত না হয়ে থাকলে সঠিক বয়সের পক্ষে সকল দলিল উপস্থাপনপূর্বক আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনে ডাক্তারী পরীক্ষা সাপেক্ষে সঠিক নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।
২০। প্রশ্নঃ স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চাই, কিভাবে করতে পারি?
উত্তরঃ নতুন স্বাক্ষর এর নমুনাসহ গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে। তবে স্বাক্ষর একবারই পরিবর্তন করা যাবে।
২১। প্রশ্নঃ আমার জন্ম তারিখ যথাযথভাবে লেখা হয়নি, আমার কাছে প্রামাণিক কোন দলিল নেই, কিভাবে সংশোধন করা যাবে?
উত্তরঃ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২২। প্রশ্নঃ একটি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ এক তথ্য শুধুমাত্র একবার সংশোধন করা যাবে। তবে যুক্তিযুক্ত না হলে কোন সংশোধন গ্রহণযোগ্য হবে না।
সূত্রঃ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ