দৈনিক ৫ অয়াক্ত নামায পড়তে হয় কিন্তু কোন নামায কত রাকআত?

আমরা সবাই জানি যে,  দৈনিক ৫ অয়াক্ত নামায পড়তে হয় কিন্তু কোন নামায কত রাকআত? মানে কত রাকআত সুন্নত আর কত রাকআত ফরজ?

ধন্যবাদ।

Add Comment
1 Answer(s)

১। ফজর এর নামাজ
২। যোহরের নামাজ
৩। আসরের নামাজ
৪। মাগরিবের নামাজ
৫। ইশার নামাজ

১। ফজর এর নামাজঃ
ফজরের নামাজ (আরবি: صلاة الفجر‎‎ সালাতুল ফজর,) ফজরের নামাজ দুই রাকাত সুন্নতদুই রাকাত ফরজ নামাজ নিয়ে গঠিত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত ফজরের নামাজের সময়। ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পর ফরজ নামাজ পরতে হয়।

২। যোহরের নামাজঃ
যোহরের নামাজ চার রাকাত সুন্নত, চার রাকাত ফরজ ও এরপর দুই রাকাত সুন্নত নিয়ে গঠিত। তবে কেউ কেউ পরে দুই রাকআত নফল নামাজ আদায় করেফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে চার রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত করতে পারে ও সুন্নত আদায় না করতে পারে।

মনে রাখবেনঃ শুক্রবার যোহরের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। জুমা ও যোহরের সময় শুরু ও শেষ হওয়ার নিয়ম একই।

৩। আসরের নামাজঃ
আসরের নামাজ (আরবি: صلاة العصر‎‎; সালাতুল আসর) আসরের নামাজ চার রাকাত সুন্নতচার রাকাত ফরজ নিয়ে গঠিত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে চার রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত করতে পারেন।

৪। মাগরিবের নামাজঃ
মাগরিবের নামাজ (আরবি: صلاة المغرب‎‎; সালাতুল মাগরিব) মাগরিব নামাজ মোট সাত রাকাত। তিন রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নতদুই রাকাত নফল নিয়ে গঠিত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে শুধুমাত্র তিন রাকাত ফরজ আদায় করতে পারে।

৫। ইশার নামাজঃ

ইশার নামায (আরবি: صلاة العشاء‎‎; সালাতুল ইশা) এশার ফরজ নামায ৪ রাকাত, যা সব মুসলিম’কেই পড়তে হয়। ফরজ অংশটি ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করতে হয় তবে একান্তই কোনো অসুবিধা থাকলে নিজে নিজে পড়ে নেয়া যায়। তবে জামাতের সাথে পড়লে সাতাশ গুন বেশি সওয়াব।

এর পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নাহ নামাজ রয়েছে। এটি ঐচ্ছিক নামাজ (সুন্নাতে যায়েদা বা গায়েরে সুন্নাত এ মুয়াক্কাদাহ ও বলা হয়)। এটিও পড়তে উৎসাহিত করা হয় এবং সময় থাকলে পড়া উচিৎ, তবে না পড়লে গুনাহ হবে না।

ফরয ৪ রাকাতের পর ২ রাকাত সুন্নাহ নামায পড়তে হয় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত (সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ) এবং নবীজী তার জীবদ্দশায় এটি কখনো ছাড়েননি। তারপর, কেউ কেউ ২ রাকাত নফল নামায পড়ে থাকেন যার কোন দলিল পাওয়া যায়নি। আসলে, নফল নামাযসমূহ নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত দিনরাতের যেকোন সময় পড়া যায়। শুধু’যে ২ রাকাতই পড়তে হবে, ব্যপারটা এমন নয়।

এরপরের নামাজটি হল বিতরের নামায তবে এটার সাথে এশার নামাযের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এটা ঘুম থেকে শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামাযের পর পড়া উত্তম। তবে যারা ঠিকমত ঘুম থেকে জাগতে পারেন না, তাদের জন্য উচিত হবে এশার নামাযের পরপরই পড়ে নেওয়া। হাদিস মতে, বিতরের নামাজ ১ রাকাত, ৩ রাকাত, ৫ রাকাত, ৭ রাকাত পড়া যায়।

মুসাফির অবস্থায় থাকলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী ইশা’র চার রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত আদায় করতে হয়। তারপর শুধুমাত্র বিতর নামাযটি আদায় করতে হয়।

* জুমার নামাজ ()

জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة‎‎ শুক্রবারের সালাত”) জুমার নামাজে দুই রাকাত ফরজ রয়েছে। এছাড়া ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত কাবলাল জুমআ এবং পরে চার রাকাত বা’দাল জুমআ (সুন্নাত নামাজ) আদায় করতে হয়। যোহরের মত ব্যক্তি চাইলে এসময় অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এসকল নফল নামাজ জুমার অংশ হিসেবে পড়া হয় না এবং তা আবশ্যকীয়ও নয় বরং ব্যক্তি তা স্বেচ্ছায় করতে পারে এবং না করলে তার দোষ হয় না।

জুমার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা আবশ্যিক এবং তা একাকী আদায় করার নিয়ম নেই। কুরআনে জুমার নামাজের সময় হলে কাজ বন্ধ করে নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তি যদি কারণবশত (যেমন খুব অসুস্থ ব্যক্তি) জুমা আদায় করতে না পারে তবে তার ক্ষেত্রে যুহরের নামাজ আদায় করা নিয়ম। তাছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যক্তির উপর, যেমন মুসাফির অবস্থায় জুমার আবশ্যকতা থাকে না এবং সেক্ষেত্রে যুহরের নামাজ আদায় করলে তা গ্রহণীয় হয়। তবে মুসাফির চাইলে জুমা আদায় করতে পারে।

 

Brong Answered on April 27, 2020.
Add Comment

Your Answer

By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.