বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ চালু করেন কে? বিস্তারিত জানতে চাই।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ চালু করেন কে? বিস্তারিত জানতে চাই।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ চালু করেন সম্রাট আকবর । তার পুরো নাম আব্দুল-ফথ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর।
তিনি ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট, মোগল বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক আব্দুল-ফথ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর।
১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে মোগল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট হুমায়ুন -এর মৃত্যুর পর, তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র আকবর মাত্র ১৪ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। মায়ের নাম হামিদা বানু।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ চালুর ইতিহাসঃ
ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর তৎকালীন সম্রাটগন হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতেন। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হত। এতে কৃষক দের অনেক দুর্ভোগ পহাতে হত।
খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জীতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরি করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
সম্রাট আকবরের সময়কালে প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। এর পরদিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের কৃষকদেরকে মিষ্টি – মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো।
পরে উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাঠের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ চালু করেন সম্রাট আকবর
সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়।
তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা বা মাশুল বা শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের কৃষকদেরকে মিষ্টি – মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এটাই ছিল সম্রাট আকবরের পচলিত পহেলা বৈশাখ এর উৎসব।
পরবর্তীতে এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হতে হতে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে।
ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্য।