বিপদ মোকা‌বেলা – একটি শিক্ষামুলক গল্প

 

বনের ভেতর, এক হরিনীর সময় হলো সন্তান প্রসব করার ।

তাই সে বনের ধারে গিয়ে নদীর পাশে ঘাসজমিতে সুন্দর একটি জায়গা খুজে বের করে নিলো, কিন্তু বিধি বাম। এই সময় হরিনীটির চারপাশে শুরু হলো বিপদ।

হরিনীটি যখন উপরে তাকালো, দেখলো, ঘন মেঘে আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে।
সে যখন জঙ্গলের দিকে তাকালো, দেখলো, ঘন জঙ্গলে হঠাৎ দাবানল শুরু হয়েছে।
এর মাঝে সে টের পেলো সামনে এক ক্ষুধার্ত বাঘ তার দিকে এগিয়ে আসছে।
আর পেছনে ফিরে দেখলো এক শিকারী তার দিকে তীর নিশানা করে আছে।

এখন সে কি করবে????
দিশেহারা, বনে দাবানল, নদীর স্রোত, ক্ষুধার্থ বাঘ আর নির্দয় শিকারী,
চারদিক দিয়ে বিপদে ঘেরে থাকা হরিনীটি তাই চুপচাপ কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে ভাবলো। তারপর সেই তার সব বিপদকে অগ্রাহ্য করে বলতে লাগলেন, আমি হতাশ কেন?
বিপদ যদি আমার রব থেকে এসে থাকে, তাহলে এই বিপদ কে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারো নেই। আর আমার রব যদি আমাকে বাঁচাতে চান, তাহলে কোন বিপদ আমাকে আঘাত করতে পারবেন না। সৃষ্টিকর্তার উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে সেই খুব ঠান্ডা মাথায় তার সন্তান প্রস্রবের প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। সাথে সাথে কিছু মিরাকল ঘটলোঃ –
কালো মেঘে ঢাকা আকাশে তুমুল ঝড় বৃষ্টি শুরু হলো। সেই সাথে প্রচন্ড বজ্রপাতে শিকারীর চোখ অন্ধ হয়ে গেলো।
– অন্ধ শিকারী তীর ছুড়ে দিলো। সেই তীর হরিনীর পাশ কেটে বাঘের মাথায় আঘাত করলো।
– তুমুল বৃস্টির জলে জংগলের আগুন নিভে শান্ত হয়ে গেলো।
– হরিনীটি একটি সুস্থ ও সুন্দর শাবকের জন্ম দিলো।

 

আমাদের জীবনেও এরকম কিছু সময় আসে। চারদিক থেকে বিপদ, নিন্দা, হতাশা আর অসহযোগিতা চেপে ধরে আমাদের। কখনো কখনো এই খারাপ সময় এত বেশি শক্তিশালী মনে হয় যে, আমরা পরিস্থিতির কাছে হার মেনে যাই। এবং সৃষ্টিকর্তার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলি । অথচ এটি ভুল নয় কি ? আর সেটা আমরা এই হরিনের গল্প থেকেই শিখে নিতে পারি।

আমাদের সবার স্বরন রাখা উচিত যে, আমরা যত বড় ঝড়ের মাঝেই থাকি না কেন, নিজেকে যত নিঃসঙ্গই ভাবি না কেন, সৃস্টিকর্তা কখনো আমাদের কে ছেড়ে যাননি, সর্বদা আমাদের কাছেই আছেন। আমাদের স্বরন রাখতে হবে যে , সৃস্টিকর্তা কখনো ঘুমান না এবং কোন তন্দ্রাও তাকে স্পর্শ করেনা, সব সময় তিনি আমাদের দেখছেন এবং আমাদের কোন প্রার্থনা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না….
আমিন
সংগৃহিত

Add Comment
0 Answer(s)

Your Answer

By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.