ভাষা কাকে বলে?

ভাষা কাকে বলে?

Add Comment
1 Answer(s)

ভাষা মানব সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মানব সভ্যতার অপরিহার্য বাহন। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি সামাজিক সৃষ্টি, মানবিক আবিষ্কার, যা সমগ্র সম্প্রদায়ের অবচেতন মনের উদ্ভাবন। প্রকৃতগতভাবেই মানুষ আবেগ, বিবক ও জ্ঞানসম্পন্ন প্রাণী। তার মনের ইচ্ছা-আকাঙ্খা, ভাব ও অনুভূতির প্রকাশের ক্ষেত্রে যেকোনো জীবজন্তু থেকে সে অধিকতর সক্ষম। তাই সে ভাষার মাধ্যমে তার মনের ভাব প্রকাশ করে। ব্যক্তিজীবনের ন্যায় সমাজজীবনেও ভাষা একটি অপরিহার্য উপাদান। সমাজের উদ্ভব, বিকাশ, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক চেতনা, অধিকার ভাবনা, সবকিছুর মূলেই থাকে ভাষার প্রেরণা। সাধারণ অর্থে লিখে বা মৌখিকভাবে আমরা যার সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করি তাই ভাষা। ভাষা মানুষের মধ্যে পরস্পর যোগাযোগের মাধ্যমে যা একটি পদ্ধতিরূপে ব্যবহৃত হয়। ভাষা তার ফুসফুস তাড়িত বায়ু দ্বারা কন্ঠ, জিহবা, দন্ত, ওষ্ঠ, তালু, মুখগহবর, নাসিকা, গলনালী প্রভৃতি যন্ত্রের সাহায্যে অর্থবহ ধ্বনি সৃষ্টি করে তার সমষ্টিকেই ভাষা বলে। আরো সংক্ষেপে বলা যায়, বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত সাংকেতিক ধ্বনি সমষ্টিই হলো ভাষা। বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে ভাষার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।

* ভেন্ডার জেনডিন (James W. Vander Zanden) এর ভাষায় “ভাষা হচ্ছে সামাজিকভাবে কাঠামোবদ্ধ একটি পদ্ধতি, যেখানে নির্দিষ্ট এবং স্বেচ্ছামূলক অর্থসহ শব্দের ধরণ, কথা এবং বাক্য থাকে”।

* সমাজবিজ্ঞানী আর.টি.স্ক্যাফার (R.T. Schaefer) তার Sociology গ্রন্থে বলেন “ ভাষা হচ্ছে সংস্কৃতির উপাদানের প্রতীক ও শব্দার্থের একটি বিমূর্ত ব্যবস্থা।

* বিশিষ্ট সংজ্ঞাবিদ Dr. Restart K- এর মতে “ভাষা হচ্ছে মনোভাব প্রকাশের জন্য মানুষের ফুসফুসতাড়িত বায়ু গলনালী, মুখবিহবর, কন্ঠ, জিহবা, তালু, দন্ত, ওষ্ঠ, নাসিকা প্রভৃতি বাগযন্ত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে আসার সময় যে আওয়াজ বা ধ্বনির সৃষ্টি হয় তার নাম ভাষা”।

* উপরিউক্ত সংজ্ঞাসমূহের আলোকে বলা যায়, ভাষা হচ্ছে সে মাধ্যম যার মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। মানুষের সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যম হিসেবেও ভাষা অপ্রতিদ্বন্ধী। ভাষা তাই নিছক কতিপয় শব্দের সমষ্টি নয়, মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

 

ভাষার সংজ্ঞা : সাধারণভাবে বলা যায়,মনের ভাব প্রকাশের নিমিত্তে বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত অপরের বোধগম্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির নাম ভাষা। অবশ্য উপরোক্ত সংজ্ঞা শুধু বাচনিক ভাষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দেহ ও মুখের ভঙ্গি এবং নানা রকম সংকেতের মাধ্যমে ও আমরা মনোভাব প্রকাশ করি। এ রূপ ভাষাকে বলে অবাচনিক ভাষা।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র মতে, ‘মানুষ যে সব ধ্বনি দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম ভাষা।’

ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘ মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন ,কোন বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত,স্বতন্ত্রভাবে অবহিত তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দ সমষ্টিকে ভাষা বলে।’

 

সাধু ভাষা ও চলিত ভাষা বলতে কী বুঝ?

Brong Answered on September 27, 2018.
Add Comment

Your Answer

By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.