“মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম” “মসজিদে দুনিয়াবি কথা বললে ৪০ বছরের আমল নষ্ট হইয়া যায়” এটা কি হাদিসের কথা?
“মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম” “মসজিদে দুনিয়াবি কথা বললে ৪০ বছরের আমল নষ্ট হইয়া যায়” এটা কি হাদিসের কথা?
“মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম”
“মসজিদে দুনিয়াবি কথা বললে ৪০ বছরের আমল নষ্ট হইয়া যায়।” জ্বাল হাদীস!
এ রকম কোন কথা আল্লাহর রাসূল (সঃ) বলেননি।
বরং সহিহ হাদীসে একথা আছে যে আল্লাহর রাসূল মসজিদে বসেই মদীনা নামক রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, সকল বিচার কার্য সম্পাদন করেছেন,অন্য দেশের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছে , যুদ্ধের পরিকল্পনাও করেছেন ,মাঝে মাঝে সাহাবীরা মসজিদে তীর-ধনুক দিয়ে প্রতিযোগীতা করেছেন (রাসূল সেখানে উপস্থিত থাকতেন )।
উমর (রাঃ) সময় এক দেশের সেনা প্রধান তার সাথে দেখা করতে আসে , সে অর্ধ পৃথিবীর বাদশার কোন রাজ প্রাসাদ না দেখে অবাক হয়েছিল। কারণ সেখানেও মসজিদে বসেই রাজ কার্য পরিচালনা হত ।
এমন কি হযরত শাহ জালাল( রঃ ) সিলেটে এসেই মসজিদ প্রতিষ্টা করেছিলেন এবং এখান থেকেই সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের জন্য লোক পাঠাতেন,বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতেন।
এগুলো কি দুনিয়ার কাজ না?
এ হাদীস মানার ফলে যে ক্ষতি হয়ঃ
১/মসজিদে দুনিয়ান্যার কথা না বলতে দেয়ায় লোকেরা যত দ্রুত সম্ভব মসজিদ থেকে বের হয়ার চেষ্টা করে।মসজিদকে জেলখানার চেয়েও ভয়ঙ্কর মনে করে।
২/নামাযের সময় পরে সব সময় মসজিদ বন্ধ থাকবে। এর ফলে অনেক সময় সানী জামায়াত করা সম্ভব হয় না,অথচ রাসুল (সঃ) এতে উৎসাহ দিয়েছেন।
৩/মসজিদ নামাজ ছাড়া সমাজের আর কোন কাজে লাগবেনা বিধায় অনেক লোকই মসজিদে দান করাথেকে বিরত থাকে।
৫/নামযের সময় একজন আরেক জনের সাথে দেখা হয় কিন্তু অনেকেই একে অপরের সাথে ভালো করে কথাও বলেনা। ফলে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় না। অথচ জামায়াত নামাজের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানভাই মুসলমানভাইয়ের পারষ্পারিক সম্পর্ক বৃদ্ধি।
এ জাল হাদীস ত্যাগ করলে যে লাভ হবেঃ
১/মসজিদে বসে যে কথা বলবে তা অশ্লিল হবেনা,মিথ্যা হবে না, অর্থাৎ মসজিদে বসে দুনিয়ার যে কথাই বলা হউক তা খারাপ হবে না।
২/মসজিদে বসে কেউ বিচার করলে ন্যায়ায় বিচার করবে,সাক্ষী দিলে সত্য দিবে কারণ তখন আল্লাহর ভয় বেশি কাজ করে।
৩/ মুসলমান গন মসজিদের দিকে আকৃষ্ট হবে।
৪/ ভাতৃত্ব দৃঢ় হবে।
৫/ খারাপ মানুষ ভালো মানুষের কাছে এসে ভালো কাজে অনুপ্রানিত হবে ।
৬/ আল্লাহর রহমতের ছায়ায় অনেক বেশি সময় কাটবে।
৭/পূর্বে বর্নিত ক্ষতি থেকে বাঁচা যাবে।
আল্লাহ্ আমাদের সকল মিথ্যা থেকে বাঁচার তওফিক দান করুন। আমীন।
সব শেষে রাসূল (সঃ) এর সেই হাদীস স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি ” তোমরা আমার উপর মিথ্যা আরুপ করবে না ”