বিড়ালে আঁচড় দিলে করনীয় কি?
আমার হাতে বিড়ালের আচর করেছে এখন কি করব?
বিড়ালে আঁচড় দিলে করনীয় কি?
অনেকেই আছেন যারা ভ্যাক্সিনেশন বিহীন বিড়ালের আঁচড় খেয়ে গ্রুপে আর্জেন্ট পোস্ট দেন, আমাকে বিড়ালে খামচি দিছে, এখন আমার কি করনীয়…
আর সেই পোষ্টে কিছু পাবলিক আছে, যারা চোখ বন্ধ করে বলে দেন যে মাস্ট আপনাকে ভ্যাক্সিন দিতে হবে না হলে আপনি বাঁচবেন না।
একে তো যে বেচারা বা বেচারী আচঁড়টা খেয়েছে সে এমনিতেই ভয়ে আছে আর তার উপরে কিছু মানুষ তাকে আরো বেশী অযথা ভয় দিচ্ছে।
এখানে আগেই কিছু কথা বলে নিই, বিড়ালে আঁচড় দিলে ভ্যাক্সিন নিতে হয়, কথাটা সঠিক, কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে কতোটুকু ক্ষতিগ্রস্থ হলে ভ্যাক্সিন নেওয়াটা জরুরী। অনেক সময় দেখা যায় সামান্য একটু আচড় যা ভালো ভাবে বোঝাও যাচ্ছে না, এমতবস্থায় অনেক গ্রুপ মেম্বার সাজেস্ট করেন ভ্যাক্সিন নিয়ে নিতে। ভ্যাক্সিন না নিলে সমস্যা হতে পারে ব্লা ব্লা ব্লা…
কিন্তু সামান্য আঁচড়ে, যেখানে সামান্য পরিমানে রক্তও বের হয়না, তার মানে আঘাতটা চামড়া ভেদ করেনি, উপরে সামান্য পরিমানে লাল হয়েছে, এমন অবস্থায় শুধু সাবান দিয়ে ধুয়ে নিলেই হয়, যাতে করে অপরিষ্কার জনিত কারণে কোন জীবানু না থাকে, এছাড়া আর কিছুই করার প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশে বিড়ালের র্যাবিস খুবই রেয়ার, ০.০১% ও আছে কি না সন্দেহ, সেখানে একটা অচেনা বিড়াল সামান্য আচড় দিলে র্যাবিস ভ্যাক্সিন ভ্যাক্সিন করে মাথা খারাপ করে ফেলাটা আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়, যদি আঘাত গুরুতর হয়, মনের সান্তনার জন্য ভ্যাক্সিন দিয়ে নিতে পারেন, কিন্তু এমন আঘাত যেখানে র্যাবিস থাকলেও কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেসব ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিন সাজেস্ট করাটা বোকামী বলে মনে করি। ভ্যাক্সিন মুখের কথা না যে বললাম আর দিয়ে দিলাম, এটার অনেক প্রসিডিউর আছে আর অনেক ঝামেলার বিষয়। তাই অযথা ভ্যাক্সিন সাজেস্ট করে মানুষকে কষ্ট দিবেন না। যেখানে সত্যিই ভ্যাক্সিন দেওয়ার প্রয়োজন আছে সেখানে অবশ্যই বলবেন দিয়ে নেওয়ার জন্য।
সর্বশেষে, আমার কথাগুলো পড়ে থাকলে একটু বোঝার চেষ্টা করুন আমি এখানে কি বোঝাতে চেয়েছি, আমি ভ্যাক্সিন নেওয়ার বিরোধীতা করছি না, জীবন বাচানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ভ্যাক্সিন এর গুরুত্ব আছে, কোন কুকুর কামড় বা আচড় দিলে অবশ্যই ভ্যাক্সিনেশন আমিও সাজেস্ট করে থাকি, কিন্তু বিড়ালের আচড়ের ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিন সাজেস্ট করাটা বুঝে শুনে এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী করা উচিত। বিড়ালে টাচ করলেই ভ্যাক্সিন দিতে হয় এই চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি। বিড়াল মোটেও এমন কোন ভয়ংকর প্রাণি না, যদি তাই হতো তাহলে আমাদের ধর্মেও কুকুর এর মতো বিড়াল পালন হারাম করা হতো। বিড়াল থেকে মানুষ সেভাবে হার্ম হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই ইসলাম বিড়াল পালন সমর্থন করে এবং আমাদের নবীজীও বিড়াল পালন করেছেন। অন্যদিকে কুকুর থেকে র্যাবিস সংক্রামণের সম্ভাবনা বেশী থাকে, অর্থাত মানুষের জন্য হার্মফুল তাই ইসলামও কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া কুকুর পোষা জায়েজ করেনি। আশাকরি বিষয়টা সবাই বোঝার চেষ্টা করবেন।
আমার পোষ্টের পক্ষে বিপক্ষে অবশ্যই মন্তব্য করতে পারেন, কিন্তু আমার কথা গুলো আমি কি বোঝাতে চেয়েছি তা বুঝে তারপরে মন্তব্য করতে আসবেন। প্রয়োজনে এই পোষ্টটি আবার পড়ুন তারপরে মন্তব্য করুন।
সবাইকে ধন্যবাদ